শুরুটা হয়েছিলো ২০১৬ তে
শুরুটা হয়েছিলো ২০১৬ তে
ফেসবুকে তাকে চুপি চুপি ফলো করতাম।
ধরতে গেলে সে আমার ক্রাশই ছিলো....তবে এটা জানতাম না উনিও আমাকে চুপি চুপি ফলো করেন।আমি ভাবছিলাম তাকে একবার একবার নক করবো।দিন যায়,মাস যায় কিন্তু নক করা হয় না...
২০১৬ ডেইটা ঠিক মনে নেই।সেদিন এক ফ্রেন্ডের সাথে চ্যাট করছিলাম হঠাৎ দেখি "আক্রামুজ্জামান অন্তর" সেন্ট ইউ এ স্টিকার
(আমি তো ম্যাসেজটা দেখে
)।
যাই হোক শুরু তো হলো কথা বার্তা....কিন্তু বলা হলো না কিছু
....বেশ কিছুদিন কেটে গেলো।মাঝেমধ্যে কথা হয় কি হয় না।
আমিও নতুন রিলেশনে জড়িয়ে যাই।কিন্তু পারসোনাল কিছু কারণে রিলেশনটা আর টিকে নি।
প্রায় ১ বছর হয়ে যায়।
ওই যে বলছিলাম ২০১৬ মনে আছে?হ্যাঁ সে ছেলেটা "আক্রামুজ্জামান অন্তর"
সময়গুলো খারাপ যাচ্ছিলো।এক সময় সবকিছু তাকে খুলে বললাম।শুরু হলো চ্যাট,তারপর ফোনে কথা বলা।একটু একটু করে কখন যে ৫-৬ ঘন্টা হয়ে যেতো বুঝতেই পারতাম না।ইভেন আমাদের ২৪-২৫ ঘন্টাও কথা বলার রেকর্ড আছে।কেউ কাউকে বলাতাম না কিছু যে দুজন দুজনকে কতোটা ভালোবেসে ফেলেছিলাম।
শুনো না মনে আছে?
২ মিনিট ফোন অফ থাকলে ঝিনুক (আমার বেস্ট ফ্রেন্ড) কে ফোন দিয়ে পাগল করে ফেলতা।ইশ.....!!!আর কি কান্নাকাটি করতা আল্লাহ!!!
ছেলে মানুষ যে এভাবে কান্না করে তোমাকে না দেখলে বুঝতামই না!!!
(অথচ তখনও আমাকে বলো নি যে তোমাকে ভালোবাসি)
একসময় ইচ্ছা করে ফোন অফ রাখতাম তোমাকে আমার প্রতি ফিলিংস টা বুঝানোর জন্য।(কখনও আমি তোমাকে বলি নাই রাগ করো না প্লিজ)।ইশ কি দিনগুলা ছিলো।
"ভালোবাসি বলাটা হয়তো অফিসিয়ালি বলা হয় নি,কিন্তু দুজন দুজনের জন্য জান টা দেওয়ার জন্যও হাজির ছিলাম।
ও ফুচকার কথা তো বলাই হয় নি।রাত ১২ টা নাই ১ টা নাই যখন বাহানা করতাম বাসার সামনে হাজির থাকতো।একসময় তুমি বলতা ফুচকা ওয়ালা হবা।
শুধু ফুচকা না আজ পর্যন্ত যতগুলা বাহানা করছি সব কিছুই পূরণ করছো।
২৫ তারিখ ২০১৮ হঠাৎ দুজনেই ওপেন রিলেশনে আসলাম।
ভালোই যাচ্ছিলো সব কিছু হঠাৎ আমার বাসায় খবর আসলো আমাদের রিলেশনের কথা।আর সেদিন থেকে শুরু হয় একধাপ প্রব্লেম।
রিলেশন নিয়ে বাসায় প্যারা
২০১৯ সবে মাত্র এইচ,এস,সি দিয়েছি।বাসায় রিলেশন নিয়ে ঝামেলা এটা যেনো এক নিত্য সঙ্গী হয়ে গেছিলো।
যাই হোক এভাবে ভালো মন্দ নিয়ে চলে গেলো আরও কয়েকমাস।

(২০২০-৬ই এপ্রিল)লাইফে একটা বড় ধাক্কা।কেন এমনটা হলো আজও চিন্তা করি।সেদিন হঠাৎ করে তোমার বাবা স্টক করে মারা যায়।(ইন্না-লিল্লাহ)
একে তো রিলেশনটা বাসায় মানছে না তার উপর তার বাবা মারা গেলেন।এক প্রকার আমার বাসায় বিয়ের প্রেসার চলছিলো।কি করবো আর বুঝতে পারছিলাম না।আমি ১৩ তে স্টাডি করছি আর সে বি.এস.সি করছে।ওর জব নাই তার মধ্যে বাবা মারা গেলেন।সময়টা আসলে কতোটা খারাপ হলে সেই সময় সারাদেশে লকডাউন পরে যায়।জব ট্রাই করা তো দূর দেশজুড়ে লকডাউন।কি করবো বুঝতে পারছি না।এক সাইডে আমার বাবা মা অন্য সাইডে অন্তর।
আর এক পাশে তার বাবা মারা যাওয়ার শোক।এমন অবস্থা আমি না আপছি কাউকে বলতে না পারছি সহ্য করতে।
আমার বাসায় তো সবসময়ের মতো বিয়ের প্রেসার চলছিলোই আর এমন অবস্থায় অন্তর কে বলতেও পারছি না যে আমার বাসায় কি চলছে কারণ সেই সময় বিয়ের কথা বলা মানেই নেহাত বাহানা করা।কারণ তার বাবা মারা গেলেন মাত্র ১ মাস।
বেশি দিন না এপ্রিল তো চলেই গেলো। রোজার ঈদ শেষ হওয়ার পরপর আম্মু একদিন আমাকে নিয়ে বসলো আর সবকিছু জিজ্ঞেস করলো অন্তর আর আমাকে নিয়ে?আসলে রিলেশনটা নিয়ে আমরা কতটা সিরিয়াস জানতে চায় আম্মু কারণ এভাবে ফ্যামেলিতে প্রব্লেম হচ্ছে।
দিনটা ছিলো মে মাস।
মে মাসের শেষ দিক দিয়ে দুই পরিবারে সব জানানো হলো।আম্মু আব্বুকে সব জনালো।অন্তর ও তার পরিবারকে সিরিয়াসলি সব জানালো এবার।অন্তরের দুলাভাই আর আমার মামা ২ পরিবারের খোঁজ নিচ্ছিলো।আসলে আজকে আমাদের একসাথে থাকার দিনগুলো সব তাদের দুজনের জন্যই।
২ পরিবারকে তো জানানো হলো সবকিছু কিন্তু কোনো প্রকার ফয়সালা হচ্ছিল না।অনেক টেনশনে ছিলাম দুজন কারণ পরিবার থেকে কেউ কিছু জানাচ্ছে না।এভাবে কেটে গেলো ৪-৫ দিন।
হঠাৎ রাত ১০ টার দিকে খবর আসলো যে ১০ তারিখ কাবিন(২০২০ জুনের ১০ তারিখ)।আসলে এটা শক্নে আমরা দুজনেই খুব শকড।২ পরিবার এভাবে খুশি খুশি সব মেনে নিবে আমরা ভাবি নি।
অনেক ঝামেলা শেষে বিয়ের দিন আসলো।বিয়ের দিন সকালে কি করছ মনে আছে?
তোমাকে হলুদ দিবে তোমার বাসা থেকে ফোন দিছে তোমার ফ্রেন্ড কই তুই? আজকে না তোর হলুদ?
সেদিন শুক্রবার।১২ টা বাজে আর তকমি আমার বাসার মোড়ে আসছিলা।কারণ ফুল আর বিয়ের কিছু জিনিস দিতে।
তোমার ফ্রেন্ডকে দিয়ে জিনিসগুলো পাঠায়ে দিছিলা।বিয়ের দিন সকালে আমার বাসার মোড়ে আসছিলা কারণ আর কিছুক্ষণ পর তো গফ থাকবো না বউ এর দায়িত্ব পালন করতে হবে।
ফাইনালি ২ টার পর বর পক্ষ আসলো আর আমি জানালার ফাঁক দিয়ে তোমাকে দেখছিলাম।সবসময়ের মতো তোমার ৩২ টা দাঁত দেখায়ে হাসতেছিলা।যাই হোক ৮ টার মধ্যে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন।
আজকে আমাদের বিয়ের ২ মাস ২৬ দিন।আলহামদুলিল্লাহ
।অনেক ভালো আছি আমরা।
২ পরিবার এখন বেশি খুশি।
এই ছিলো আমাদের গল্প।
মন থেকে একবার চেয়ে তো দেখো ভালোবাসার মানুষকে অবশ্যই পাবা।শুধু চাইলেই হয় না চাওয়ার মতো চাইতে হয়।
সব পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ভালো বাসার মানুষটাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে হয়।
পরিবারের চাপে ভালোবাসার মানুষের হাত ছেড়ে দিতে নেই।ওর বাবা মারা যায়, ওর চাকরী নেই এর পর ওই কঠিন সময়টাতে হাত ছাড়ে নি সে আমার।
আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন এভাবেই সারাজীবন একসাথে থাকতে পারি।
Comments
Post a Comment